আজকে আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা উৎসব কবিতার প্রশ্ন এবং উত্তর নিয়ে আলোচনা করব। এই কবিতায় একটি আদিবাসী বা সাঁওতাল পল্লীর উল্লেখ আছে, যেখানে পূর্ণিমার রাত্রের জ্যোৎস্না ধারায় এক আনন্দ উৎসবে তারা মেতে উঠেছে। সেই সাঁওতাল পল্লীর গ্রামীন এলাকার বর্ণনা এবং তাদের সাধারণ জীবনযাত্রার কথা তুলে ধরা হয়েছে এই কবিতায়।
কবিতার এই লাইনগুলিতে পূর্ণিমার চাঁদ ও জ্যোৎস্না ধারার কথা আছে, এই শব্দগুলি থেকে আমরা বুঝতে পারি যে উৎসবটি রাতে হচ্ছে।
মেঘ কোথায়?
অতি দূরে মাঠের শেষে যে পাহাড়ের চূড়া দেখা যাচ্ছে, মেঘ সেখানে রয়েছে।
রাত শেষে কী শোনা যাচ্ছে?
রাত শেষে বিহঙ্গের অর্থাৎ পাখিদের ভোরের গান শোনা যাচ্ছে।
সারা বন কী রঙে রঙিন হয়েছে?
উৎসবের রাত্রি শেষে পূর্বদিকে ওঠা সূর্যের কিরণে সারা বন সোনালী রঙে রঙিন হয়েছে।
একটি বাক্যে উত্তর লেখো:
কবিতাটি কে লিখেছেন?
উৎসব কবিতাটি লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
কোন সময়ে উৎসব হবে?
বসন্তকালের পূর্ণিমা রাতে এই উৎসবটি হবে।
উৎসবে কারা থাকবে?
এই উৎসব সাঁওতাল পুরুষ ও মেয়েরা থাকবে। এছাড়াও ফুলে ভরা কিংশুক বন, পাখিদের কোলাহল, পাহাড় ও মেঘেরা থাকবে। কী কী গাছের কথা আছে? উৎসব কবিতাটিতে তালগাছ, পলাশ গাছ , আম গাছ ও চাপা গাছের কথা আছে। কীসের শব্দ শোনা যাচ্ছে? সাঁওতাল পল্লীতে উৎসবের সময় দুন্দুভি, ঢাক, ঢোল ও বাঁশির শব্দ শোনা যাচ্ছে। উৎসব কখন শেষ হয়? বসন্তের পূর্ণিমা রাত্রি যখন শেষ হয়ে পূর্ব দিকে সূর্য উঠে সমস্ত বন সোনালী রঙ্গে রাঙ্গিয়ে দেয় উৎসব তখন শেষ হয়। কোন গাছ গন্ধ বিতরণ করছে? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উৎসব কবিতায় চম্পার সৌরভ, এবং আমগাছ তার মুকুলের গন্ধ বিতরণ করছে।
দু-তিনটি বাক্যে উত্তর দাও :
সন্ধ্যার পৃথিবী জেগে আছে কেন?
বাসন্তীর পূর্ণিমার রাত্রে সাঁওতাল পল্লীতে উৎসব হচ্ছে। তাদের নৃত্য গীতের কোলাহল, দুন্দুভির ডিম্ ডিম্ শব্দ, এবং বাঁশির সুরে সন্ধ্যার পৃথিবী জেগে আছে।
সাঁওতাল কন্যার কানের অলংকার কী দিয়ে তৈরি?
কিংশুক অর্থাৎ পলাশের ফুল দিয়ে সাঁওতাল কন্যার কানের অলংকার তৈরি হয়েছে।
মেঘের রং কীরকম দেখাচ্ছে?
অতি দূরের প্রান্তরে পাহাড়ের চূড়ায় নীল আকাশের মাঝে ভেসে থাকা সাদা মেঘের রং যেন রেশমি কাপড়ের মত দেখাচ্ছে।
ওরা হাসছে কেন?
সাঁওতাল পল্লীতে উৎসব হচ্ছে। এই উৎসবে সমস্ত সাঁওতাল পুরুষ ও মেয়েরা নৃত্য গীতের তালে তালে একসাথে আনন্দের উৎসবে হাসছে।
কতক্ষণ ধরে উৎসব চলবে?
ধীরে ধীরে রাত শেষ হয়ে যখন পূর্ব দিগন্তের প্রান্তরেখায় সূর্য উঠে সমস্ত বন তার সোনালী কিরণে রাঙিয়ে দেবে, পাখিরা সকালের গান গাইবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই উৎসব চলবে।
তিন-চারটি বাক্যে লেখো
উৎসবের স্থানটির বর্ণনা করো।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উৎসব কবিতায় বর্ণিত স্থানটি হল একটি সাঁওতাল পল্লীতে যেখানে রয়েছে ফুলে ভরা একটি পলাশের বন, আমগাছ, তালগাছ ইত্যাদি অনেক ধরনের গাছপালাতে পরিপূর্ণ। সামনের দূর প্রান্তরে দেখা যায় একটি পাহাড়ের চূড়া যেখানে পূর্ণিমার চাঁদের ও জ্যোৎস্না ধারায় ভেসে বেড়ানো মেঘেরা তাদের রেশমি কাপড় উড়িয়ে যেন এই উৎসবে যোগ দিচ্ছে।
কীভাবে প্রকৃতিও এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেছে বুঝিয়ে দাও।(চাঁদ-গাছ-ফুল-মেঘ-এর কথা বলতে হবে)
বাসন্তী পূর্ণিমা রাতে অনুষ্ঠিত সাঁওতাল পল্লীর এই উৎসবে পূর্ণিমার চাঁদ ও জ্যোৎস্না ধারা উৎসবের স্থানটিকে স্নিগ্ধ আলোতে পরিপূর্ণ করে রেখেছে। চম্পার সৌরভ ও আম্র মুকুলের গন্ধে সারা বন মায়াময়। বনের গাছপালা ও তালগাছ তাদের শাখা পল্লব হাওয়াতে আন্দোলিত করে যেন যোগ দিয়েছে এই উৎসবে। দূরে মাঠের শেষে পাহাড়ের চূড়াতে মেঘ তার রেশমি কাপড় উড়িয়ে এই উৎসবে যোগ দিয়েছে।